শরবত বিভিন্ন সময়ে আমরা খেয়ে থাকি। এটি আমাদের শারীরিক মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। সেই শরবত যদি হয় ওষুধি গুন সমৃদ্ধ উপাদান দিয়ে তৈরি তাহলে আমাদের শরীরের জন্য আরও ভালো হয়। আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি স্পেশাল ভেষজ শরবত প্যাক যেটি ইসবগুলের ভুষি, তোকমা, কাতিলা, চিয়া সীড তালমাখনা ইত্যাদি উপাদান দিয়ে তৈরি। 

চলুন জেনে আসি শরবত প্যাকের কিছু উপকারিতা:

১.কোষ্ঠকঠিন্যতায়: কোষ্ঠকঠিন্য হলে এক থেকে দুই চা চামচ শরবত প্যাক নিয়ে ১ গ্লাস পানিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে তাতে ২-৩ চামচ চিনি মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে বা রাতে শোয়ার আগে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক সব উপাদান যা আমাদের পেটের পীড়া, কোষ্ঠকঠিন্যতায় উপকারী। যারা দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকঠিন্যতায় ভুগছেন তারা ২ মাস নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকঠিন্য দূর হবে। 

২.হজমে সাহায্য করে: এর উপাদানগুলো ফাইবার সমৃদ্ধ এবং দেহের বিপাক বাড়ানোর বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি উপাদেয়। উচ্চ ফাইবারের কারণে তৃপ্তি এবং ক্ষুধা যন্ত্রণা কম অনুভূত হয়ে থাকে। এটা সহজে কোন মানুষ বুঝতে পারে না। বর্ধিত বিপাকীয় হার স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেহের শক্তির প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তুলবে যার ফলে চর্বিতে রূপান্তরিত করতে কম সংখ্যক ক্যালোরি প্রয়োজন হবে।

৩.শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি: গরমে আপনি দিনের ২ বেলা নিয়ম করে যদি শরবত প্যাক পানিতে ভিজিয়ে তাতে লেবু মিশিয়ে একটু মধু বা মিছরি মিশিয়ে খেতে পারেন তাতে যেমন সারাদিনের ক্লান্তি কেটে যাবে তেমনি শারিরীক সক্ষমতা বেড়ে যাবে বহুগুণে। এটা যৌনতার ক্ষেত্রেও হতে পারে।

৪.পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে: খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের উচ্চতর উপাদানের কারণে অন্ত্রের খাবারের শোষণকে উন্নত করে। পেট পরিষ্কারে ওষুধের চেয়ে এটি অনেকগুণে উপকারী। সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অর্শ্বরোগের সৃষ্টি হয়। অর্শ্বরোগ অনেক সময় ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতেও রূপান্তরিত হতে পারে। এসব সমস্যার শুরু থেকে সমাধান করতে উপকারী। 

৫.ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে: এর উপাদানগুলো রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর। মূলত দেহের বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয়। ফলে কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এ কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস যাঁদের রয়েছে, তারা এটি নিয়মিত খেতে পারেন। রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়, কারণ এটি হজম প্রক্রিয়াটিকে গতিশীল করে।

৬.গ্যাস্টিক সমস্যা দূর করে: যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রয়েছে তারা গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট সেবন না করে শরবত প্যাক খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এতে করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে দূর হবে। এটি এসিডিটি দূর করতেও কার্যকর। এটি পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণ করে জ্বালাপোড়া দূর করে।

৭.প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া বন্ধ করে: যাদের ইউরিনে জ্বালাপোড়া আছে তারা সকালে-বিকালে শরবত খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমবে এবং ইউরিনের রং স্বাভাবিক হয়ে যাবে। 

৮. হৃদপিন্ডের কার্যকরিতা বৃদ্ধি করে: উপাদান গুলো হৃদপিন্ডের কার্যকারিতা জোরদার করে, রক্তচাপ উন্নত করে, ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, এইভাবে ধমনমনীয় ও বাধাগুলিতে চর্বি জমা হওয়ার সমস্যাগুলি রোধ করে। 

৯. হাত-পায়ের জ্বালাপোড়া বন্ধে: কিছু লোকের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হলো হাত পা জ্বালাপোড়া করা। এটি হাত ও পায়ে জ্বলন্ত সংবেদনকে উন্নত করে অর্থাৎ হাত-পায়ের জ্বালাপোড়া কমিয়ে দেয়।

এটি গরমকালে দেহের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে। শরবতের উপাদান গুলো এটা শরীরে খুবই শীতল প্রভাব ফেলে। এটা শরীরে গঠিত তাপ শীতল করে দেয়। 

১০. শরীরের ওজন কমাতে: যদি আপনি শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান কিংবা ওজন রক্ষণাবেক্ষণের ডায়েটে থাকেন তবে এটা আপনাকে অনেকাংশে সহায়তা করবে। 

 যদি এটি দানা বাদাম ও শুকনো ফলের সঙ্গে মিশ্রণ করে একমুঠো পরিমাণ খাওয়া যায়, তাহলে দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধামুক্ত থাকা যায়। এ জন্য খুব সহজেই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

১১.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: শরবত প্যাকের উপাদান গুলোতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্ল্যাভনয়েড এবং ফেনোলিক উপাদান সমূহ। একইসাথে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমূহ থাকার ফলে এটি গ্রহণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পায়। একইসাথে, ফ্রি-রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতেও বেশ উপকারী।