পিংক সল্ট নাম শুনেই খাওয়ার আগ্রহ জন্মায়। এটি পিংক সল্ট, সৈন্দব লবণ,রক সল্ট, হিমালয় লবণ বা হিমালয়ান লবণ গোলাপি লবণ এবং শিলা লবণ নামে পরিচিত। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া ভালো নয়। পিংক সল্টে ততটা ক্ষতি নেই।
সাধারণ লবণের মূল উপাদান সোডিয়াম ক্লোরাইড। এখান থেকে আমরা শুধু সোডিয়াম ক্লোরাইডই পেয়ে থাকি। কিন্তু পিংক সল্টে সোডিয়াম ক্লোরাইডের পাশাপাশি পটাসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম,
আয়রন,সোডিয়াম ইত্যাদিণ সহ ম্যাক্রো-মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায়।
১. মাথা ব্যাথা দূর করতে: যদি আপনার প্রায়ই মাথাব্যথার সমস্যা থাকে, তাহলে এই লবণ আপনার জন্য ওষুধের কাজ করবে, এর জন্য আপনাকে এক গ্লাস জলে লেবুর রস দিয়ে পিংক সল্ট ব্যবহার করতে হবে। এই পানীয়টি পান করলে আপনার মাথাব্যথা চলে যাবে। প্রতি দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালিপেটে জার থেকে এক চামচ জল নিয়ে তা এক গ্লাস পরিষ্কার জলে মেশান। এই জল SOLE (সোলে) নামে পরিচিত।
২. শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করেঃ হিমালয়ান সল্ট গোসলের পানিতে ব্যবহার করলে শরীরের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত ও বিষমুক্ত হয়। এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো পানিতে স্থানান্তরিত হয়। তাই যখন এই পানি দিয়ে গোসল করা হয় তখন শরীরের কোষ ও রক্তস্রোত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বাহির হয়ে যায়।
৩.অনিদ্রা দূর করে: আপনি যদি অনিদ্রার শিকার হন, তাহলে হিমালয়ান সল্ট অর্থাৎ ডায়েটে রক সল্ট আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মধুর সঙ্গে হিমালয়ের পিংক সল্ট খেলে অনিদ্রার সমস্যা চলে যায়। এই মিশ্রণটি সেবনের মাধ্যমে আপনি গভীর ঘুম পাবেন, যা পরের দিনও মানসিক চাপ দূরে রাখবে।
৪.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: ডায়াবিটিস এর ক্ষেত্রেও এর অপরিহার্য তা অনেকটাই। এই সল্ট আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ডায়াবিটিস হওয়ার ভয় অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
৫.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: এই সল্ট আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। পরিমাণমতো জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
৬. শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে মুক্তি দেয়: সাইনুসাইটিস, অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস বা অ্যালার্জি থেকে নিরাময়ে সাহায্য করে হিমালয়ান সল্ট। শ্বসনতন্ত্রকে পরিষ্কার হতে ও ক্ষতিকর পদার্থ বাহির হয়ে যেতে সাহায্য করে। এই লবণের অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান অতিরিক্ত মিউকাসকে নরম ও আলগা হতে সাহায্য করে এবং মিউকোসিলিয়ারি পরিবহণের গতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই লবণের উপাদানগুলো ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুকে নিরাময়ে সাহায্য করে
৭. হাড় গঠন: পিংক লবণ হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে কারণ এতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো বেশ কিছু খনিজ রয়েছে যা হাড়ের গঠন ও ঘনত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে বিভিন্ন জয়েন্ট বা গাঁট-কে সুস্থ রাখে।
৮. রক্তচাপ কমানো: হিমালয় লবণ প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিনে সমৃদ্ধ, যা খাদ্য কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে টেবিল লবণে যোগ করে। হিমালয় লবণের প্রাকৃতিক আয়োডিন শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য তৈরি, অন্ত্রকে পুষ্টি শোষণ করতে ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে খুব কার্যকর।
৯. শরীরের pH এর ভারসাম্য রক্ষা করেঃ হিমালয়ান সল্ট শরীরের ক্ষারীয় অবস্থা বজায় থাকতে সাহায্য করে। এটি দেহের তরলের হাইড্রোজেন আয়নের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সীসা, মার্কারি ও আর্সেনিকের মত ভারী ধাতু শরীর থেকে বাহির করে দিতে সাহায্য করে।
১০. ত্বককে নরম ও ময়শ্চারাইজ করে: পিংক সল্ট দিয়ে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বাড়তে পারে। এভাবে ত্বক নরম ও কোমনীয় হয়ে উঠবে। এতে কেবল মুখের ত্বকের মৃত কোষগুলোর বৃদ্ধি বন্ধ হবে না, ত্বক পূর্বাপেক্ষা আরও মসৃণতা পাবে।
Login to ask a question