আদা খুব শক্তিশালী একটি মশলা। আদা যদিও খুব সুস্বাদু নয়, তবে এর রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। আদার মধ্যে রয়েছে জিঞ্জেরল, শোগাওল, জিঞ্জিবেরিন এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে আদা প্রায় সব ধরনের রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
নিম্নে আদার গুনাগুন উল্লেখ করা হলো
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজে আসবে। ডায়েবেটিস রোগীদের মধু বাদ দিয়ে খেতে হবে।
২.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: আপনি যদি দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন আদা খাওয়ার অভ্যাস আপনার মলত্যাগের গতি বাড়িয়ে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ।
৩.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে :আদা শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি রক্তের লিপিড প্রোফাইলও নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে। তাই ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে আদা।
৪. প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। আপনি ইতিমধ্যে ঠান্ডা বা ভাইরাস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকলে আদা আপনাকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। পরিবার ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিন একটুকরো আদা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৫. বমিভাব কমায়ঃ বমিভাব এবং বমির সবচেয়ে ভাল নিরাময়গুলির মধ্যে একটি হল আদা। এটি শুধুমাত্র গর্ভাবস্থার সময় বমিভাব কমায় এবং গতির কারণে হওয়া অসুস্থতা কমায় তা নয়, এটি অস্ত্রোপচার পরবর্তী এবং কেমোথেরাপি প্রবর্তিত বমিভাবের বিরুদ্ধেও কার্যকর।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ প্রথাগতভাবে ওজন কমাতে কার্যকর আদা। এটি এখন বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত যে এই গাছড়াটি খিদে দমন করে, লিপিড পরিপাকে হস্তক্ষেপ করে, এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ওজন কমানো উন্নীত করে তোলে।
৭. কাশি এবং ঠাণ্ডা লাগার জন্যঃ আদা শরীরে পিত্ত বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে জ্বর এবং ঠাণ্ডা লাগা কমে যায়। এটি জীবাণু-বিরোধী এবং সক্রিয় উপাদান দিয়ে মধ্যস্থতা করে যার ফলে কাশি কমতে দেখা গেছে।
৮. হজম উন্নত করেঃ আদা পরিচিত হজম উন্নত করার জন্য এবং অন্ত্র থেকে খাবার শুষে নেওয়ার জন্য। এটি স্থুলতা এবং পাকস্থলীর গ্যাসও কমায়।
৯. মহিলাদের জন্য উপকারিতাঃ মাসিকের সময় হওয়া সংকুচনের সবচেয়ে ভাল নিরাময়গুলির মধ্যে একটি হল আদা। গবেষণা প্রমাণ করে যে ঋতুস্রাবের আগের ৩দিন এবং প্রথম ২দিন আদা খেলে মাসিকের ব্যথায় আরাম পাওয়া যাবে। ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহও কমায়।
১০.এসিডিটি সমস্যা দূর করে: আদা খেলে তা অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির উৎপাদন কমিয়ে পেটকে আরাম দেয়। বুকে ও গলায় জ্বালাপোড়া হলে তা দূর করার জন্য কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা চা ও মধুর সঙ্গে আদার রস মিশিয়েও খেয়ে নিতে পারেন। এতে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।
১১. ইনফেকশনের ভয় কমায়: আদায় থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদান ইনফেকশনের আশংকা দূর করার জন্য পরিচিত। এই উপাদান নিরাময় প্রক্রিয়া দ্রুত করার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে দেয় না। আদা খেলে কিছু ইনফেকশনের ভয় দূর হয়। জিনজিভাইটিস এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ তার মধ্যে অন্যতম।
Login to ask a question