ব্রাহ্মী শাক হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ব্রাহ্মী ফুল সবচেয়ে বেশি ভেষজ উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী। তাই একে ব্রেন বুস্টারও বলা হয়। তবে ব্রাহ্মীর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দেহের অনেক সমস্যা নিরাময় করতে পারে। খুব সাধারণ এই শাকের রয়েছে অসাধারণ কার্যক্ষমতা। নানান জটিল রোগ প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর এই শাক। আসুন এই বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
১. প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ব্রাক্ষ্মী শাকের মধ্যে রোগ প্রতিরোধকারী প্রচুর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই রোজ এই ব্রাক্ষ্মী শাক খেলে শরীরে বল বাড়ে। রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। যাঁরা অল্পেই কাহিল হয়ে পড়েন তাঁদের জন্য ব্রাহ্মী শাকের জুস কিন্তু খুবই ভাল। বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রাহ্মী শাক। তাই রোজ একচামচ এই শাক-পাতা খেতে পারেন।
২. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও ভূমিকা রয়েছে ব্রাহ্মী শাকের। মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাল অংশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যা আমাদের চিন্তা-ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. উদ্বেগ কমাতে: ব্রাহ্মী শাক স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমায়। সেই সঙ্গে কর্টিসলের মাত্রাও রাখে নিয়ন্ত্রণে। এই হরমোন স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত। আজকালকার দিনে সকলের জীবনেই প্রচুরস চাপ। বেশিরভাগই উদ্বেগ হতাশায় ভুগছেন। সেক্ষেত্রে এই শাক খুবই ভাল কাজ করে।
৪. ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে: ব্রাহ্মী শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি কোষ থেকে ক্ষতিকর দূষিত বের করে দেয়। ফলে ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
৫. বাতের ব্যথা কমাতে: বাত এবং প্রদাহ জনিত, ব্যথা, জ্বালা কমাতেও উপকারী এই ব্রাক্ষ্মী শাক। যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও রোজ খেলে উপকার পাবেন। আলসারের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয় এই শাক।
৬. রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে: ব্রাক্ষ্মী শাক ডায়াবেটিসের রোগীদের শরীরে রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যাঁদের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য খুব ভাল এই ব্রাহ্মী শাক। যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁরা গরম ভাতে সামান্য ঘি দিয়ে এই শাক খেলে উপকার পাবেন।
৭. রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক: ব্রাহ্মী শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে নাইট্রিক অক্সাইড, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি হ্রাস করে। ব্রাহ্মী শাক রক্ত পাতলা করতেও সহায়তা করে, যার কারণে শিরাগুলিতে রক্ত প্রবাহ সহজেই ঘটতে পারে।
৮. স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে- মনে করা হয় ব্রাক্ষ্মী শাক স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে। ব্রাহ্মী শাকে ভেষজটিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। এটি একটি অ্যাডাপ্টোজেন ভেষজ হিসাবে বিবেচিত হয়।
৯. মৃগী রোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকর: আয়ুর্বেদের মতে ব্রাহ্মী শাকের সাহায্যে দেহের সমস্ত স্নায়ু শক্তিশালী হতে পারে এবং সমস্ত ব্যাধি কাটিয়ে উঠতে পারে। মৃএই শাকের মেন্টাতে এন্টিপাইলপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মৃগী নিরাময়ে সহায়তা করে।
১০. শ্বাসকষ্টের সমস্যায় কার্যকর: যাদের হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস বা শ্বাসকষ্টের মতো শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ রয়েছে তাদের ব্রক্ষ্মীর নির্যাস বা রস খুব উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যাডাপ্টোজেনিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ফুসফুসগুলি শক্তিশালী। এটি শ্বাস নালীর প্রদাহ এবং প্রদাহজনিত সমস্যাও সরিয়ে দেয়।
Login to ask a question